ত্বককে আরো সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ইনগ্রিডিয়েন্স এর আগমন ঘটছে। এই ইনগ্ৰিডিয়েন্টস এর মধ্যে কিছু ইনগ্রিডিয়েন্টস খুবই কার্যকর হয় ত্বকের জন্য। তেমনি একটি কার্যকর ইনগ্রেডিয়েন্টস হল পেপটাইড।
পেপটাইড হলো আ্যমিনো আ্যসিডের সংক্ষিপ্ত চেইন। যেখানে ত্বকের কোলাজেন, ইলাস্টিন এবং অন্যান্য কাঠামোগত প্রোটিন তৈরি হয়। পেপটাইড আমাদের ত্বকে ন্যাচারালি থাকে। গবেষণায় জানা যায় পেপটাইড সাপ্লিমেন্ট এর থেকে টপিকেল পেপটাইড ব্যবহার করা ত্বকের জন্য বেশি কার্যকর।
ত্বকে পেপটাইড এর কাজ
ত্বকে নিয়মিত পেপটাইড ব্যবহার করার ফলে পেপটাইড ত্বকে কোলাজেন উৎপাদনে উদ্দীপ্ত করে অর্থাৎ ত্বকে কোলাজেনের প্রোডাকশন বাড়ে। যা সূক্ষ্মরেখা, বলিরেখা দূর করে এবং ত্বকে অ্যান্টি এজিং হিসেবে কাজ করে।
এছাড়াও ত্বকের যত্নে পেপটাইড এর কাজগুলো হলো –
ত্বক নরম রাখে: পেপটাইড ত্বকে কোলাজেন উৎপাদনে উদ্দীপ্ত করে ফলে ত্বকে কোলাজেন প্রোডাকশন বাড়ে এবং ত্বকের বলিরেখা , ছোপ ছোপ দাগ কমায় ফলে ত্বক নরম ও মসৃণ হয়।
ত্বক হাইড্রেট রাখে: পেপটাইড এর ক্রিমি স্ট্রাকচার খুবই হালকা যার ফলে এটি ত্বকে খুব ভালোভাবে মিশে যায় এবং ত্বক হাইড্রেট রাখে।
চোখের ডার্ক সার্কেল কমায়: পেপটাইড চোখের মাস্ক ফর্মুলেশনও পাওয়া যায়। এটি নিয়মিত ব্যবহারের ফলে চোখের ডার্ক সার্কেল কমে যায়।
ত্বক দাগ মুক্ত রাখে: পেপটাইড ত্বকের এফেক্টেড এরিয়া গুলোতে কোলাজেনের প্রোডাকশন বাড়িয়ে ত্বক হিল করে এবং ছোট ছোট দাগ কমাতে সাহায্য করে ফলে, ত্বক দাগ মুক্ত ও সুন্দর হয়।
বয়সের ছাপ কমায় :
বয়স বাড়ার সাথে সাথে ত্বকে প্রাকৃতিকভাবে কোলাজেনের পরিমাণ কমে। ফলে ত্বকে দেখা দেয় বিভিন্ন সমস্যা। যেমন-বলিরেখা , সূক্ষ্মরেখা, ফাইন লাইন, ছোপ ছোপ দাগ ইত্যাদি। এক্ষেত্রে পেপটাইড সমৃদ্ধ স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহারের ফলে ত্বকের এফেক্টেড এরিয়াতে পেপটাইড কোলাজেনের প্রোডাকশন বাড়াতে সাহায্য করে এবং ত্বক হিল করে।
পেপটাইডে রয়েছে অ্যান্টি এজিং ফর্মুলা। এটা ত্বকের বলিরেখা ,সূক্ষ্মরেখা ,ফাইন্ লাইনস, প্রিম্যাচিউর এজিং কমিয়ে ত্বক মসৃণ ও কোমল রাখে।
ত্বকের গ্লো বাড়ায়:
নিয়মিত স্কিন কেয়ার রুটিনে পেপটাইড ব্যবহারে ত্বক হাইড্রেট থাকে এবং ভিতর থেকে গ্লোয়িং ও ইউথফুল হয়। পেপটাইড যে কোন স্কিনে ব্যবহার করা যায়। এটি সব স্কিন টাইপের জন্যই খুব ভালো কাজ করে।
ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত প্রসাধনীর মধ্যে কোন ধরনের পেপটাইড এর ব্যবহার হয়?
ত্বকের যত্নে বিভিন্ন ফর্মুলেশনে পেপটাইড ব্যবহৃত হয়। ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত কিছু নরমাল পেপটাইড হলো -ম্যাট্রিক্সিল পেপটাইড,
কপার পেপটাইড, পালমিটয়েল ট্রিপেপটাইড -1।
ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত প্রসাধনির মধ্যে সিরাম, মশ্চারাইজার, চোখের মাস্ক, শীট মাস্ক সহ বিভিন্ন ফর্মুলেশনে পেপটাইড পাওয়া যায়। এই ইনগ্ৰিডিয়েন্ট ব্যবহারের ফলে ত্বকে কোলাজেনের প্রোডাকশন বাড়ে এবং ত্বকে বলিরেখা , সুক্ষরেখা ,ফাইন লাইনস কমে যায়।
চুলের যত্নে পেপটাইড –
চুলের স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য বজায় রাখতে চুলের যত্ন করা খুবই জরুরী। চুলের যত্ন ভালোভাবে না করলে চুল রুক্ষ ও নিষ্প্রাণ হয়ে যায়।
আধুনিক যুগে আমরা সবাই চুলকে সাজিয়ে রাখতে বিভিন্ন ধরনের ওয়ে অবলম্বন করি। যেমন-ঘন ঘন চুল কালার করা, স্ট্রেট করা এক্ষেত্রে চুলে প্রচুর পরিমাণে তাপ প্রয়োগ হয়, নিম্নমানের হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করার ফলে চুল পড়ার সমস্যা শুরু হয় এবং চুল অনেক রুক্ষ হয়ে যায়।
DHT হরমোন হেয়ার গ্রোথ কমিয়ে দেয়। সেক্ষেত্রে পেপটাইড DHT হরমোন বৃদ্ধিতে বাঁধা প্রদান করে এবং চুলে কোলাজেন ও ইলাস্টিনের মাত্রা বাড়ায়। এর ফলে চুল পড়া কমে ,চুল মজবুত হয়, চুল বৃদ্ধি পায় এবং নতুন চুল গজায়।
বর্তমানে পেপটাইড চুলের জন্য একটি ম্যাজিক্যাল ট্রিটমেন্ট ইনগ্রিডিয়েন্টস।
পেপটাইডের সোর্স
খাদ্য তালিকায় নিয়মিত ডিম, দুধ, মাংস ইত্যাদি রাখলে পেপটাইড এর ভারসাম্য শরীরে ঠিক থাকে। কারণ ডিম, দুধ ও মাংস পেপটাইড এর খুব ভালো সোর্স।
দ্রুত হেয়ার গ্রোথ বাড়ায়
পেপটাইড আমাদের চুলের ফলিকলে ব্লাড সার্কুলেশন বাড়ায় ফলে চুলের গোড়ায় প্রয়োজনীয় অক্সিজেন ও নিউট্রেশন পৌঁছাতে পারে এবং চুল তাড়াতাড়ি লম্বা হয়।
চুল ঘন করে
পেপটাইডে রয়েছে এন্টি ইনফ্লেমেটরি প্রপার্টিজ। যার ফলে মাথার স্কেল্প ভালো থাকে এবং চুলের ফলিকলের মাত্রা বাড়ে। এতে নতুন চুল গজায় এবং চুল আরো ঘন হয়।
চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে
DHT নামক হরমোন হেয়ার গ্রোথ কমিয়ে দেয় ।সেক্ষেত্রে পেপটাইড DHT নামক হরমোন কে হেয়ার গ্রোথ কমাতে বাধা প্রাপ্ত করে । এতে ইলাস্টিন ও কোলাজেনের মাত্রা বাড়ে এবং চুল মজবুত ও ঘন হয় ফলে চুল পড়া কমে।
কারা পেপটাইড ব্যবহার করতে পারবেন?
সব ধরনের চুলেই পেপটাইড ব্যবহার করা যায়। বিশেষ করে যাদের ড্রাই এবং ড্যামেজ হেয়ার তাদের অবশ্যই পেপটাইড যুক্ত সিরাম ,কন্ডিশনার, হেয়ার মাস্ক ইত্যাদি ব্যবহার করতেই হবে।
নতুন চুল গজাতে পেপটাইড খুবই কার্যকরী। তাই নিয়মিত হেয়ার কেয়ার রুটিনে পেপটাইড যুক্ত কসমেটিক প্রোডাক্ট ব্যবহার করে
ভিজিবল রেজাল্ট পাবেন।
প্রথমত পেপটাইড যুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই প্যাচ টেস্ট করে নিবেন।