ত্বকের জন্য সেরা ব্লাশ কালার ও ৫টি সেরা ম্যাট ব্লাশ প্যালেট।
মেকআপে ব্লাশ খুবই পরিচিত একটি নাম। মেকআপের ধরন ভারী কিংবা হালকা যেমনই হোক না কেন, গালের মাঝে হালকা পিংকিস ভাব যেন চেহারায় এক আলাদা পরিবর্তন এনে দেয়।
ব্লাশের রং বলতে অনেকেই শুধু পিংককেই চিনে। ব্লাশেরও রয়েছে অনেক কালার ভেরিয়েন্ট । মেকাপের অন্যান্য পণ্যের মতো ব্লাশের রং সিলেকশনে কিছু নিয়ম রয়েছে। যা মেইনটেইন করে ব্লাশের রং সিলেকশন করলে মেকআপ লুক দেখতে আকর্ষণীয় হয়। চলুন আজকের ফিচারে ত্বকের ধরন অনুযায়ী ব্লাশের কালার সিলেক্ট করার উপায় ও পাঁচটি সেরা ম্যাট ব্লাশিং প্যালেট সম্পর্কে জেনে নেই।
নিজের স্কিনটোন ও আন্ডারটোন আইডেন্টিফাই –
শুধু ভারী মেকআপেই ব্লাশ এপ্লাই করতে হয় ,তা কিন্তু নয়। হালকা মেকআপ লুকেও ব্লাশ এপ্লাই করলে মেকআপ লুক দেখতে অনেক সুন্দর ও স্নিগ্ধ লাগে। ব্লাশ ছাড়া মেকআপ লুকে যেন এক আলাদা অপূর্ণতা রয়ে যায়। বাজারে ও অনলাইন শপে এখন প্রায় সব স্কিনটোনের জন্যই ডিফারেন্ট শেইডের ব্লাশ অ্যাভেইলেবল রয়েছে। আপনার ত্বকের জন্য সঠিক কালারের ব্লাশ সিলেক্ট করতে প্রথমেই নিজের স্কিনটোন ও আন্ডারটোন আইডেন্টিফাই করতে হবে।
স্কিনটোন –
স্কিনটোন হল ফেইসের উপরের অংশের রং । এশিয়ান নারীদের স্কিন টোন সাধারণত Fair (উজ্জ্বল ফর্সা), Light (ফর্সা), Medium (মাঝারি শ্যামলা), Tan (শ্যামলা) ও Deep (গাঢ় শ্যামলা) রং এর হয়। আপনার স্কিন টোন কি তা জানতে কিছু পরীক্ষা করে বুঝতে পারেন। যেমন- প্রাকৃতিক আলোতে আয়নার সামনে গিয়ে গালের এক পাশে ত্বকের রং এর সাথে ভিজুয়াল স্কিনটোন চার্ট লাগিয়ে পর্যবেক্ষণ করে খুব সহজেই আপনার স্কিন টোন আইডেন্টিফাই করতে পারবেন।
আন্ডারটোন-
আন্ডারটোন হলো আমাদের ফেইসের নিচের কালার। আন্ডারটোন আইডেন্টিফাই করার অনেকগুলো উপায় আছে, এক্ষেত্রে আপনি প্রাকৃতিক আলোয় গিয়ে হাত মুঠো করে হাতের রিস্ট বা ভেইনের কালার খেয়াল করুন। যদি ভেইনের কালার সবুজ হয়, তাহলে আপনার ওয়ার্ম আন্ডারটোন, যদি নীল বা বেগুনী হয়, তাহলে কুল আন্ডারটোন আর যদি সবুজ ও নীলের মাঝামাঝি কালার হয়, তাহলে নিউট্রাল আন্ডারটোন।
স্কিনটোন ও আন্ডারটোন অনুযায়ী ব্লাশের সঠিক শেইড
এবার চলুন স্কিনটোন ও আন্ডারটোন অনুযায়ী ব্লাশের সঠিক শেইড সম্পর্কে জেনে নিই।
ফেয়ার স্কিনটোন –
ফেয়ার স্কিনটোনে যেকোনো হালকা কালারের ব্লাশ ব্যবহার করলে ত্বকে একটা স্নিগ্ধ আভা ফুটে ওঠে এবং দেখতেও ভালো লাগে। ফেয়ার স্কিনটোনের কুল আন্ডারটোনে বেবি পিংক ,সফট রোজ ও লাইট প্লাম খুবই ভালো মানায়। এছাড়াও ওয়ার্ম আন্ডারটোনে পিচ,এপ্রিকোট ,সফট কোরাল ও নিউট্রাল আন্ডারটোনে রোজ পিংক,লাইট মভ ও কোরাল পিচ ব্যবহার করলে মেকআপ লুক অনেক সুন্দর ভাবে ফুটে ওঠে ।
লাইট স্কিনটোন –
লাইট স্কিনটোনের কুল আন্ডারটোনে রোজি পিংক ও কুল মভ,ওয়ার্ম আন্ডারটোনে -পিচ ,লাইট কোরাল এবং নিউট্রাল আন্ডারটোনে সফট পিংক ও নুড পিচ কালারের ব্লাশ খুবই ভালো মানায়।
Medium (মাঝারি শ্যামলা) স্কিনটোন-
আমাদের দেশের বেশির ভাগ মেয়েদের স্কিনটোন Medium (মাঝারি শ্যামলা) রং এর। এই স্কিনটোনের কুল আন্ডারটোনে বেরি,প্লাম,কুল রোজ ,ওয়ার্ম আন্ডারটোনে -কোরাল, ট্যারাকোটা,পিচি নুড ও নিউট্রাল আন্ডারটোনে – মভ, ওয়ার্ম পিংক কালারের ব্লাশ খুবই এডজাস্টেবল দেখায়।
Tan (শ্যামলা) স্কিনটোন-
কুল আন্ডারটোনে রাসবেরী, ডিপ রোজ, বেরি পিংক।
ওয়ার্ম আন্ডারটোনে অরেঞ্জ ,কোরাল,ব্রিক পিচ।Orange Coral, নিউট্রাল আন্ডারটোনে ব্রিক পিচ,সফট ব্রিক ও ওয়ার্ম মভ।
Deep (গাঢ় কালো) স্কিনটোন –
কুল আন্ডারটোনে ওয়াইন,ফুচিয়া,ডিপ বেরি।
ওয়ার্ম আন্ডারটোনে ব্রিক রেড,বার্ন অরেঞ্জ ডিপ কোরাল।
নিউট্রাল আন্ডারটোনে বারগান্ডি ,ট্যারাকোটা রোজ।
৫টি সেরা ম্যাট ব্লাশ প্যালেট
এইতো, ত্বকের ধরনের অনুযায়ী ব্লাশের কালার সিলেক্ট করার উপায় সম্পর্কে তো জেনে নিলাম চলুন এবার, পাঁচটি সেরা ম্যাট ব্লাশিং প্যালেট সম্পর্কে জেনে নেই।
Technic Mega Matte Blush
এই ব্লাশিং প্যালেটটিতে রয়েছে চারটি ম্যাট ব্লাশ শেইড। এখানে রয়েছে সফট বেবি পিংক,পিচ কোরাল,ডিপ রোজ পিংক ও ওয়ার্ম অরেঞ্জ কোরাল। এর আরো কালার ভেরিয়েশন আছে। এই প্যালেটটি ম্যাট ফিনিশ স্মুথ লুক ক্রিয়েট করে, এতে কোনো শিমার নেই। তাই এটি অল-ডে ওয়্যার এবং প্রফেশনাল মেকআপ লুকের জন্যও উপযুক্ত।
Lois Chloe D’L Bloom Blush Palette 3*3.5Gm
এই প্যালেটটিতে তিনটি পপুলার ব্লাশিং শেইড রয়েছে। এখানে গোল্ডেন পিচ(শিমারি) , ওয়ার্ম রোজ পিংক(ম্যাট) ও কোরাল পিচ (ম্যাট) শেইড রয়েছে। প্রফেশনাল মেকআপ আর্টিস্টরা এই ভ্যারিয়েন্টের শেইড বেশি পছন্দ করে। এই শেইড গুলো খুব সহজেই ত্বকে ব্লেন্ড হয়। রেগুলার ও প্রফেশনাল মেকআপ লুকে এই ব্লাশিং শেইড গুলো খুবই ভালো মানায়।
W7 Candy Blush
এটি একটি জনপ্রিয় ওয়ান-শেড ব্লাশ সিরিজ। এটি সিঙ্গেল পটে পাওয়া যায় এবং বিভিন্ন কালার ভ্যারিয়েন্টে আসে। এটি একটি পাউডার ফর্মের ব্লাশ। এর ফিনিশিং সাধারণত ম্যাট বা লাইট স্যাটিন হয়। রেগুলার লাইফস্টাইলের সিম্পল লুকের জন্য এটি খুবই ভালো।
Imagic Touch Blush Palette
এটি একটি প্রফেশনাল কোয়ালিটির ব্লাশ প্যালেট। এখানে মোট ছয়টি মাল্টি কালারের ব্লাশিং শেইড রয়েছে।এটি মেকআপ আর্টিস্ট ও বিউটি লাভারদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়, কারণ এর এক প্যালেটেই বিভিন্ন স্কিনটোনের জন্য উপযোগী ব্লাশিং শেইড রয়েছে। এটি ত্বকে খুব সহজেই ব্লেন্ড হয় ও এর পিগমেন্টেশন প্রফেশনাল গ্ৰেডের।
Makeup Revolution Blusher Reloaded Ballerina
এটি একটি জনপ্রিয় সিঙ্গেল ব্লাশ শেইড সিরিজ। এই প্যালেটটির ব্লাশিং শেইড গুলো সফট ও ফেমিনিন লুকের জন্য পারফেক্ট। এটি ত্বকে স্যাটিন/ হালকা শিমারি লুক ক্রিয়েট করে।
এটি ত্বকের জন্য খুবই স্মুথ ও সহজেই ব্লেন্ড হয়।
আশা করি, আজকের ফিচারে উল্লেখিত ৫ টি ব্লাশিং প্যালেট থেকে আপনার পছন্দ অনুযায়ী কাঙ্খিত প্যালেট Hretus World থেকে পারচেজ করে ,ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক ব্লাশিং শেইড সিলেক্ট করে কাঙ্খিত মেকআপ লুক ক্রিয়েট করতে পারবেন খুব সহজেই।