সল্যুশন

ত্বকের তারুণ্যতা ধরে রাখার সহজ ৫টি উপায়।

ত্বকের তারুণ্যতা ধরে রাখার সহজ ৫টি উপায়।

ত্রিশ বছর বয়সী কোরিয়ান নারীদের ত্বক দেখে অনেকেই বিশ বছর বয়সী মনে করে, ভুল করে। এমন ভুল আমরাও অনেক করি, ত্বক যদি হয় উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত তবে ত্বকের কাছে বয়সের হিসাবও যেন হার মানে।

বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্বাভাবিক ভাবেই ত্বকে পরিবর্তন আসে যেমন-বলিরেখা, ফাইন লাইনস ও রিংকেলের মতো বিভিন্ন রকমের বার্ধক্যজনিত লক্ষণ। ত্বকের এই সমস্যা গুলো প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া হলেও অনেকের চেহারায় নির্দিষ্ট বয়স সীমার আগেই বয়সের ছাপ পড়ে যায়। এক্ষেত্রে প্রশ্ন থেকে যায়, এই সমস্যা গুলো থামানোর কি কোনো উপায় আছে! ; না এইগুলো থামানো সম্ভব নয় ,তবে ত্বকের এই পরিবর্তনকে সঠিক যত্ন আর সুশৃঙ্খল জীবনধারার মাধ্যমে ধীর করা যায়। আজকের ফিচারে আমরা জানবো এমন ৫টি সহজ উপায় সম্পর্কে, যা নিয়মিত মেনে চললে আপনিও দীর্ঘদিন পর্যন্ত ত্বকের তারুণ্যতা ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে পারবেন।

প্রথমেই জেনে নেই,

ত্বকের তারুণ্যতা কেন হ্রাস পায়?

  • বিভিন্ন কারণে ত্বকের তারুণ্যতা কমে যায়। এরমধ্যে প্রধান কারণ হলো ত্বকে কোলাজেন ও ইলাস্টিন প্রোটিনের উৎপাদন কমে যাওয়া। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিকভাবেই শরীরে কোলাজেন ও ইলাস্টিন প্রোটিনের উৎপাদন কমে যায়। ফলে ত্বক ঢিলে হয়ে যায় এবং বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়।
  • দীর্ঘ সময় ধরে সূর্যের সংস্পর্শে থাকলে, সূর্যের ক্ষতিকর UV রশ্মি ত্বকের গভীরে গিয়ে কোলাজেন ভেঙে ফেলে ও পিগমেন্টেশন বাড়ায়। এতে ত্বকের উজ্জ্বলতা কমে যায় ও ত্বক ঢিলে হয়ে যায়।
  • অস্বাস্থ্যকর ,অতিরিক্ত চিনিজাত খাবার, ফাস্ট ফুড ও প্রক্রিয়াজাত খাবার ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। এসব খাবার নিয়মিত খাওয়ার ফলে ত্বকে বলিরেখা ও ব্রণ সৃষ্টি হয়।
  • অতিরিক্ত চিন্তা ও স্ট্রেস হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে পাশাপাশি ত্বকের ওপরেও প্রভাব ফেলে- ব্রণ, এলার্জি ও বলিরেখা সৃষ্টি করে। তাই শরীরকে চিন্তা ও স্ট্রেসমুক্ত রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে। কারণ ঘুমের মাধ্যমে শরীর ও ত্বক রি-জেনারেট হওয়ার পর্যাপ্ত সময় পায়।
  • ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন ত্বক ও স্বাস্থ্য উভয়ের জন্যই হুমকি স্বরূপ। ধূমপান ও অ্যালকোহল নিয়মিত সেবনের ফলে শরীরে রক্তপ্রবাহ কমে যায়, অক্সিজেন সরবরাহ ব্যাহত হয় এবং ত্বক শুষ্ক ও বিবর্ণ হয়ে যায়।

এইতো জেনে নিলাম, কি কারনে ত্বকের তারুণ্যতা হ্রাস পায় সে সম্পর্কে। ত্বকের তারুণ্যতা বজায় রাখতে উপরের অভ্যাসগুলো পরিহার করে চলতে হবে। এবার জানব, কোন অভ্যাসগুলো মেনে চললে তারুন্যতা বজায় থাকে সে সম্পর্কে।

ত্বকের তারুণ্যতা ধরে রাখার উপায়:

skin care

১. হাইড্রেটেড থাকুন-

ত্বক ও সুস্বাস্থ্যের জন্য পানির কোন বিকল্প নেই। ত্বককে হাইড্রেটেড রাখতে প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
কারন পানি শরীর থেকে বিষাক্ত টক্সিন বের করে ত্বককে সতেজ রাখতে সাহায্য করে।

২. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেইনটেইন করা-

প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার প্রোভাইড করুন। খাবার ডায়েটে বিভিন্ন ধরনের বাদাম যেমন-কাঠ বাদাম, আখরোট,চিনাবাদাম, পেস্তাবাদাম ও কাজুবাদাম রাখুন। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের রঙিন শাকসবজি, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল-(কমলালেবু, মাল্টা, টমেটো,আমলকি), জাম্বুরা,চিয়া সিডস ও গাজর ‌নিয়মিত খাবার ডায়েটে রাখুন। আমিষ জাতীয় খাবার যেমন – ডিম, দুধ ও বিভিন্ন ধরনের মিঠা পানির কিংবা সামুদ্রিক মাছ খাবার তালিকায় অবশ্যই রাখবেন। ত্বককে সুন্দর ও তারুণ্যদীপ্ত রাখতে নিয়মিত সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেইনটেইন করে চলতে হবে।

৩. নিয়মিত স্কিন কেয়ার করা-

ত্বকই সৌন্দর্যের আয়না। ত্বককে উজ্জ্বল ও তারুণ্যদীপ্ত রাখতে সঠিক ভাবে ত্বকের যত্ন নিতে হবে। শুধু যেমন তেমন করে যত্ন নিলেই হবে না, ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক প্রোডাক্ট পারচেজ করে স্কিন কেয়ার রুটিন মেইনটেইন করতে হবে। এক্ষেত্রে ত্বকের ধরন অনুযায়ী ক্লিনজার, টোনার,সিরাম, ময়েশ্চারাইজার ও ফেইস মাস্ক hretusworld.com থেকে পারচেজ করে নিয়মিত ব্যবহার করুন। সপ্তাহে ১-২ বার স্ক্রাব ও মাস্ক ব্যবহার করে ত্বককে এক্সফোলিয়েশন করূন।

৪. সানস্ক্রিন ব্যবহার-

বাইরে বের হওয়ার আগে SPF যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে ভুলবেন না। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, যারা রেগুলার সানস্ক্রিন ব্যবহার করে তাদের ত্বক অন্যান্যদের তুলনায় অনেক বেশি তারুণ্য দীপ্ত ও টানটান থাকে। তাই স্কিন স্পেশালিস্টরা ত্বকের যত্নে সানস্ক্রিন সাজেস্ট করে। এটা ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর UV রশ্মি থেকে রক্ষা করে এবং বয়সের ছাপ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

৫. মানসিক চাপ কমিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান –

স্ট্রেস কিংবা দুশ্চিন্তা শরীর ও ত্বক উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর।নিজেকে স্ট্রেস মুক্ত রাখতে পরিবার কিংবা বন্ধুদের সাথে সময় কাটান, ধ্যান, যোগব্যায়াম, গান শোনা , পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো ও প্রকৃতির সবুজ শ্যামল পরিবেশে হাঁটাহাঁটি করে মানসিক চাপ দূর করুন। নিয়মিত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করূন। কারন ঘুমের মাধ্যমে শরীর, মন ও ত্বক রি-জেনারেট হয়।

ত্বকের তারুণ্যতা বজায় রাখা‌ খুব একটা কঠিন কাজ নয়। ত্বকের সঠিক যত্ন, সুশৃংখলভাবে জীবনধারা পরিচালিত করা, সঠিক খাবার ও ইতিবাচক মানসিকতা মেইনটেইন করে চললে শরীর ও ত্বক উভয়ই সতেজ, প্রাণবন্ত এবং তারুণ্যদীপ্ত থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *